সূরা ফাতিহা পবিত্র কুরআনের সর্বপ্রথম সূরা এবং এটি একটি অতুলনীয় আধ্যাত্মিক সম্পদ। এই সূরায় আল্লাহর প্রশংসা ও মোসলমানদের জন্য পথপ্রদর্শক। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এ সূরাকে উম্মুল কিতাব বলে আখ্যায়িত করেছেন। এটি শুধু নামাজের অপরিহার্য অংশই নয়, বরং এর ফজিলত, বরকত ও রহমত ভরপুর। মোসলমানদের কল্যাণে এই সূরার ভূমিকা অপরিসীম।
আরও পড়ুন : হেদায়েত কিভাবে আসে
সূরা ফাতিহা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৭। এটি কুরআনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যা প্রতি রাকাত নামাজে পাঠ করা ওয়াজিব। এমন কোন নামাজ নেই যেখানে এই সূরা পাঠ করা হয় না।
সূরা ফাতিহার অসংখ্য নাম ও গুণ আছে যেগুলোর ফজিলত ও বরকত বর্ণনা করতে করে শেয করা যাবে না। সূরা ফাতিহা কে ফাতিহাতুল কিতাবও বলা হয় অর্থাৎ এর দ্বারা পবিত্র কুরআনের সূচনা হয়। এই সূরায় সকল রোগের শিফা, সকল রোগের ঔষধ এবং আল্লাহর প্রশংসা আছে, আল্লাহর ক্ষমতাও বর্ণনা আছে। সব নামাজে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।
আরও পড়ুন : সূরা বাকারাহ ফজিলত, বরকত ও রহমত
সূরা ফাতিহার অন্যান্য নামসমূহ।
১. ফাতিহাতুল কিতাব – কুরআনের সূচনা।
২. উম্মুল কুরআন – কুরআনের মূলভিত্তি।
৩. সাবউল মাসানী – সাতটি বারংবার পঠিত আয়াত।
৪. আস-সালাত – নামাজের মূল অংশ।
৫. আশ-শিফা – রোগমুক্তির মাধ্যম।
৬. আর-রুকইয়া – ঝাড়ফুঁক ও রোগ নিরাময়ের সূরা।
৭. আল-কাফিয়া – যথেষ্টকারী সূরা।
৮. আল-আসাস – ইসলামের ভিত্তি।
সূরা ফাতিহার ফজিলত ও বরকত। সূরা ফাতিহা ছাড়া নামাজ শুদ্ধ হয় না। যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা ছাড়া নামাজ পড়ল, তার নামাজ অসম্পূর্ণ। এই সূরা নামাজে দাড়িয়ে পাঠ করলে আল্লাহ পাক সরাসরি বান্দার উত্তর দেন। সূরা ফাতিহার মাধ্যমে আল্লাহর সাথে বিশেষ কথোপকথন সুযোগ সৃষ্টি হয়।
নামাজে সূরা ফাতিহা পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার সাথে সরাসরি কথা বলেন। নামাজে সূরা ফাতিহা পড়লে আল্লাহ যা বলেন, 'বান্দা যখন বলে, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন, আমি বলি, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল।
আরও পড়ুন : সূরা মায়েদার ফজিলত ও রহমত
সূরা ফাতিহা শিফা বা আরোগ্যের মহা ঔষধ হিসাবে বরকত ময়। সাহাবায়ে কেরাম একবার বিষাক্ত পোকায় কামড়ানো এক ব্যক্তিকে সূরা ফাতিহা পড়ে ফুঁক দিলে সে সুস্থ হয়ে যায়। কেউ রোগ্য হলে সে যেন পবিত্রতার সহিত সূরা ফাতিহা পড়ে পানিতে ফু দিয়ে পান করে। সূরা ফাতিহা পাঠ করলে শয়তান ও জিনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
আল্লাহর রহমত লাভে সূরা ফাতিহা পাঠকারী আল্লাহর বিশেষ রহমত পায়। সূরা ফাতিহা পাঠের নিয়ম ও বিশেষ আমল। প্রতিদিন ৪১ বার সূরা ফাতিহা পড়লে হাজারো সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। রোগমুক্তির জন্য সূরা ফাতিহা পড়ে পানিতে ফুঁক দিয়ে পান করলে ইন শা আল্লাহ সুস্থতা লাভ হবে। সকাল-সন্ধ্যায় ৭ বার সূরা ফাতিহা পড়লে শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন : সূরা আন-নিসার ফজিলত, বরকত ও রহমত
সূরা ফাতিহা কুরআনের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সূরা, যা আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বরকত, রহমত ও সফলতা বয়ে আনে। এটি শুধু নামাজের সূরা নয়, বরং এটি একটি পরিপূর্ণ দোয়া, রোগমুক্তির উপায় এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম। তাই আমাদের উচিত নিয়মিত সূরা ফাতিহা পাঠ করা এবং এর ফজিলত হাসিল করা।
0 মন্তব্যসমূহ