হেদায়েত আরবি শব্দ, যার অর্থ সঠিক পথের দিশা বা পথনির্দেশ। হেদায়েত হলো আল্লাহ তায়ালার বিশেষ অনুগ্রহ, যা তিনি তাঁর বান্দাদেরকে সত্য ও ন্যায়ের পথ দেখানোর জন্য দান করেন। হেদায়েত ছাড়া মানুষ পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্তিতে পড়ে।
হেদায়েত কিংবা দ্বীনের প্রতি আনুগত্য কেবল আল্লাহর রহমত হয়। বল, আমার নামায, আমার যাবতীয় ‘ইবাদাত, আমার জীবন, আমার মরণ (সব কিছুই) বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই। একটি মানুষ কে হেদায়েত সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য আল্লাহর দেওয়া সহজাত পথনির্দেশ।
এটি ঈমানদারদের জন্য আল্লাহর বিশেষ রহমত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ হেদায়েত দেন, সেই হেদায়েতপ্রাপ্ত। আল্লাহ যাকে সৎপথ দেখান সে সঠিকপথে থাকে আর যাকে তিনি পথহারা করেন, তার জন্য কখনো সৎপথের দিশা থাকে না।
আরও পড়ুন : আল্লাহ যাদের সাহায্য করবেন
এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে সরাসরি অন্তরের আলোকিত করে যা মানুষের গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে সৎপথে চলতে সাহায্য করে। আমরা দুনিয়ায় এমন বহু মানুষ দেখি যারা বিভিন্ন ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলামে এসেছে তাদের উপর আল্লাহর রহমত হয়েছে বলে তারা রহমত পেয়েছে।
তাদের জীবন ধন্য হয়েছে কেননা হাজারো মানুষ মধ্যে থেকে হেদায়েত পেয়েছে। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চাচা কে বহুবার ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন কিন্তু তিনি ইসলাম কবুল করেননি। এটা প্রমাণ করে হেদায়েত আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে।
আরও পড়ুন : আল্লাহ যাদের পথ দেখাবেন
নবীজি তার চাচার মৃত্যুর সময় পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন তার চাচাকে ইসলামের পথে আনার জন্য। কিন্তু তিনি হেদায়েত থেকে বিতাড়িত হয়েছে। আমরা সৌভাগ্যবান তাই আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দান করেছেন।
আরও পড়ুন : সূরা ফাতিহার ফজিলত ও বরকত
নিশ্চয়ই এই কুরআন এমন পথ দেখায়, যা সর্বাধিক সরল। আমাদের জীবনাদর্শ হেদায়েতের অন্যতম উৎস হচ্ছে পবিত্র কুরআন কে আকড়ে ধরে রাখা। রাসূল (সাঃ) বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আমার সুন্নত ও কুরআন আকড়ে ধরে রেখেছো। কিন্তু আজ আমরা কুরআন সুন্নাহ ও ইসলামের পথ থেকে সরে এসছি।
আমরা আল্লাহর নেক বান্দাদের জীবনচরিত থেকে হেদায়েত লাভ করা যায়। সূরা ইখলাস (আন্তরিকতা) পড়লে সওয়াবের বর্ণনা শেষ করা যাবে। এই সূরায় আল্লাহর পরিপূর্ণ বর্ণনা দেওয়া আছে। এটার মধ্যে ফজিলত ও রহমতের অভাব নেই।
দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে হেদায়েত চাওয়া। এমন মানুষ আমরা এখন প্রায় দেখি যারা জামাতে যায় আল্লাহর রাস্তায় বের হয় কিন্তু দেখা যায় কিছুদিন যাওয়ার পর দেখি তারা হেদায়েত থেকে বঞ্চিত হয় এই জন্য আমাদের হেদায়েতের জন্য দোয়া করার কোন বিকল্প নেই।
গুনাহ ত্যাগ করা পাপ হেদায়েত পাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করে। পাপ কাজ মানুষের দ্বারা প্রতিদিন হয়। এই পাপ থেকে বাঁচার উপায় জানা থাকলেও পাপ থেকে বাঁচা সম্ভব হচ্ছে না, এই জন্য ক্ষমা কিংবা ইস্তেগফার পড়তে হবে।
আর পড়ুন : সূরা আল-মায়েদার ফজিলত ও রহমত
হেদায়েত থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ অনেক তবে কিছু নিদিষ্ট কারণও আছে। অহংকারের কারণে ফেরাউনের মতো ব্যক্তিও হেদায়েত পায়নি।
জুলুম ও পাপাচার পাপের অন্ধকার হৃদয়কে হেদায়েত থেকে দূরে রাখে। আল্লাহর নেয়ামতের অকৃতজ্ঞতা শিকার করা। শোকর না করলে হেদায়েত কমে যায়।
হেদায়েত আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত। এটি লাভের জন্য আমাদেরকে সর্বদা আল্লাহর কাছে দু'হাত তুলে প্রার্থনা করতে হবে এবং তাঁর দেওয়া বিধান মেনে চলতে হবে। হেদায়েতপ্রাপ্ত ব্যক্তিই দুনিয়া ও আখিরাতে সফলকাম হবে।
0 মন্তব্যসমূহ