নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, “দাজ্জাল ততক্ষণ পর্যন্ত বের হবে না, যতক্ষণ না মানুষ তার কথা ভুলে যাবে, মিম্বর থেকে দাজ্জালের আলোচনা উঠে যাবে।”
দাজ্জাল প্রকাশের পূর্বে মুসলমান এবং রোমান খৃষ্টানদের মধ্যে বড় ধরনের কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হবে। আল্লাহর রহমতে মুসলমানগণ চূড়ান্ত বিজয়ার্জন করবেন।
মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, “জেরুজালেমে জনবসতি বৃদ্ধি মানে মদীনার বিনাশ। মদীনার বিনাশ মানে বিশ্বযুদ্ধের সূচনা। বিশ্বযুদ্ধের সূচনা মানে কনষ্ট্যান্টিনোপল বিজয়। কনষ্ট্যান্টিনোপল বিজয় মানে দাজ্জালের আবির্ভাব।-”
আরো পড়ুন : ঋণ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি লাভের দোয়া
মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন,- “দাজ্জাল প্রকাশের পূর্বের তিন বছর মহা দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হবে।
প্রথম বছর আল্লাহ আসমানকে এক তৃতীয়াংশ বৃষ্টি এবং জমিনকে এক তৃতীয়াংশ ফসল বন্ধ করে দেয়ার আদেশ করবেন।
দ্বিতীয় বছর আল্লাহ আসমানকে দুই তৃতীয়াংশ বৃষ্টি এবং জমিনকে দুই তৃতীয়াংশ ফসল বন্ধ করে দেয়ার আদেশ করবেন।
রাজত্ব হাসিলের আমল ও দোয়া
তৃতীয় বছর আল্লাহ আসমানকে সম্পূর্ণ বৃষ্টি এবং জমিনকে সম্পূর্ণ ফসল বন্ধ করে দেয়ার আদেশ করবেন। ফলে এক ফোটা বৃষ্টি-ও বর্ষিত হবে না। একটি শস্য-ও অঙ্কুরিত হবে না। মুষ্টিমেয় ছাড়া সকল ছায়াদার বস্তু ধ্বংস-মুখে পড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে অর্থাৎ গাছ, পালা ও বৃক্ষকুল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ”
[ সুনানে ইবনে মাজাহ ]
এই কথা শুনে এক সাহাবী রাসূল (সাঃ) জিজ্ঞেস করেন, ‘সেদিন তাহলে মানুষ কি খেয়ে জীবন ধারণ করবে হে আল্লাহর রাসূল?’ প্রশ্নের উত্তরে নবীজী (সাঃ) বললেন, "তাকবীর (আল্লাহু আকবার পাঠ) এবং তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ পাঠ) মানুষের পাকস্থলিতে খাদ্যের কাজ দেবে।-”
[ ইবনে মাজাহ ]
তারপর দাজ্জাল তার দলবল নিয়ে আত্নপ্রকাশ করবে। দাজ্জাল বিশ্বের প্রতিটি শহরে, প্রতিটি অঞ্চলে গিয়ে পৌঁছবে। পৃথিবীতে তার অবস্থান-মেয়াদ হবে চল্লিশ দিন। প্রথম দিনটি এক বৎসর, দ্বিতীয় দিনটি এক মাস, তৃতীয় দিনটি এক সপ্তাহ এবং অবশিষ্ট দিনগুলো স্বাভাবিক দিনের মত হবে। দুই কানের মাঝে চল্লিশ গজের ব্যবধান- এমন গাঁধায় সে আরোহণ করবে।
আরো পড়ুন : দারিদ্র্যতা থেকে বাঁচার দোয়া
দাজ্জালের কিছু ক্ষমতা থাকবে যেমন মৃত মানুষকে জীবিত করা, পশু পাখির সাথে কথা বলা ইত্যাদি। সে মানুষের কাছে এসে বলবে- “আমি তোমাদের পালনকর্তা!” তার দুই চোখের মাঝে আরবীতে অবিশ্বাসী লেখা থাকবে। শিক্ষিত অশিক্ষিত সকল মুমিন সেটি পড়তে পারবে। মক্কা- মদীনা ছাড়া প্রতিটি শহরে- প্রান্তরে সে পৌঁছুবে।”
[ মুসনাদে আহমদ ]
ওই সময় ঈমান রাখা খুবিই কষ্টকর হয়ে যাবে। যাদের নড়বড়ে ঈমান তারা দাজ্জালকে বিশ্বাস করবে। দাজ্জালকে খোদা মানবে। ফলে দাজ্জাল আকাশকে বলবে বৃষ্টি দিতে, তারপর বৃষ্টি হবে। জমিনে দাজ্জালের কথায় শস্য ফলবে। ফলে দাজ্জালের কথায় বিশ্বাসি মানুষ সাময়িক সময়ের জন্যে সুখী জীবন যাপন করবে।অন্যদিকে যারা দাজ্জালকে খোদা মানবে না, তাদের দিন কাটবে কষ্টে।
আরো পড়ুন : হযরত সালেহ (আঃ) উম্মত ধ্বংসের কাহিনি
এভাবেই দাজ্জাল মানুষের ঈমান নষ্ট করবে এই ৪০ দিন ধরে।
[ সহীহ মুসলিম ]
৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর দাজ্জলের বিনাশ হবে কোথায়?
উহুদ পর্বতের চূড়ায় উঠে মসজিদে নববীর দিকে তাকিয়ে নবী (সাঃ) উনার অনুসারীদের বলেন, তোমরা কি ঐ সাদা প্রাসাদটি দেখতে পাচ্ছ? অর্থাৎ মসজিদে নববী। সেখানেই তার বিনাশ ঘটবে।-”
[ মুসলিম ]
আল্লাহ আমাদের দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা করুন, আমীন।
0 মন্তব্যসমূহ