Comment

সূরা আল-আন আমের ফজিলত, বরকত ও রহমত



সূরা আল-আন আম পবিত্র কুরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এটি পবিত্র কুরআনের বড় সূরা গুলোর মধ্যে একটি এবং এতে ১৬৫টি আয়াত রয়েছে। এই সূরার বিষয়বস্তু হলো তাওহিদ, রিসালাত, আখিরাতের বিশ্বাস এবং শিরকের অসারতা। এ সূরার অনেক আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ, নবীদের দাওয়াত।


আরও পড়ুন : সূরা মায়েদা ফজিলত, বরকত ও রহমত 


কাফিরদের যুক্তির জবাব দেওয়া হয়েছে। সূরা আল-আন‘আম তিলাওয়াত, অধ্যয়ন ও আমলে অনেক ফজিলতপূর্ণ, যা মুমিনের জীবনে বরকত ও রহমত বয়ে আনে। এই সূরায় তাওহিদের ব্যাপক আলোচনা থাকায় এটি শিরকের ভয় থেকে মুমিনকে হিফাজত করে।



আর তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীর প্রতিনিধি করেছেন এবং তোমাদের কতককে কতকের উপর মর্যাদায় উন্নীত করেছেন, যাতে তিনি তোমাদেরকে যা দান করেছেন, তা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। নিশ্চয় তোমার রব দ্রুত শাস্তিদাতা এবং নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।



এই আয়াতটি তিলাওয়াত করলে। রিজিকে বরকত হয়। দুনিয়ার পরীক্ষা ও বিপদে ধৈর্য বাড়ে। আল্লাহর মাগফিরাত ও রহমত লাভ হয়।



সূরা আল-আন‘আমের বরকত ও রহমত লাভের উপায়।

১. নিয়মিত এই সূরার তিলাওয়াত করা।

২. এর অর্থ ও তাফসীর অধ্যয়ন করে আমল করা।

৩. বিশেষ করে শেষ আয়াত (১৬৫) দৈনিক আমল করা।

৪. এই সূরার শিক্ষা অনুযায়ী তাওহিদের উপর অটল থাকা এবং শিরক থেকে বেঁচে থাকা।



সূরা আল-আন‘আম কুরআনের একটি মহিমান্বিত সূরা, যা তিলাওয়াত, অধ্যয়ন ও আমলের মাধ্যমে মুমিনের জীবনে অফুরন্ত বরকত, রহমত ও মাগফিরাত বয়ে আনে। এই সূরার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর একত্ববাদের দৃঢ় বিশ্বাস অর্জন করতে পারি এবং দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা লাভ করতে পারি।



এই সূরায় আল্লাহই একমাত্র সত্য উপাস্য (আয়াত ১-৩) বলা হয়েছে। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন আর সৃষ্টি করেছেন অন্ধকার ও আলো, এতদসত্ত্বেও যারা কুফরী করেছে তারা (অন্যকে) তাদের প্রতিপালকের সমকক্ষ দাঁড় করিয়েছে। (আয়াত: ১)



আল্লাহ একমাত্র সত্য খোদা ও স্রষ্টা আল্লাহই একমাত্র স্রষ্টা, তাঁর কোনো শরীক নেই। কাফিররা মূর্তি বা অন্য কিছুর ইবাদত করে শিরক করে, যা সম্পূর্ণ ভুল। এই সূরা এক সত্য খোদার বর্ণনা আছে। আল্লাহকে দেখা যায় না, কিন্তু তিনি সব দেখেন। এই সূরায় শিরককে অমূলক প্রমাণ করে, কারণ মূর্তি বা সৃষ্টিজীব আল্লাহর সমকক্ষ হতে পারে না।



নবীদের প্রতি অবিশ্বাসের পরিণতি (আয়াত ৩৪) দেওয়া আছে। আপনার পূর্বেও অনেক রাসুলকে মিথ্যা বলা হয়েছে, কিন্তু তারা ধৈর্য ধারণ করেছেন।এবং কষ্ট সহ্য করেছেন, অবশেষে আমার সাহায্য তাদের কাছে পৌঁছেছে। নবীদের দাওয়াত সব যুগেই প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, কিন্তু তারা ধৈর্য ধরেছেন। মুমিনদেরও ধৈর্য ধারণ করতে হবে, আল্লাহর সাহায্য নিশ্চিত।



প্রকৃতির সবকিছু আল্লাহর ইশারায় পরিচালিত হয়। এগুলো চিন্তা করলে তাওহীদের বিশ্বাস দৃঢ় হয়। এই সূরা আল আন-আম মানুষকে পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি করা হয়েছে। সম্পদ, জ্ঞান ও মর্যাদায় পার্থক্য আল্লাহর পরীক্ষা। ধৈর্য ধারণ ও নেক আমলের মাধ্যমে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।



তাওহীদের দৃঢ় বিশ্বাস প্রতি বিশ্বাস করা এবং শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদত করতে হবে, কোনো শিরক নয়। নবীদের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। তাদের মতো ধৈর্য ও দাওয়াতি মিশন চালিয়ে যেতে হবে। আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করা আল্লাহর কুদরতের নিদর্শনগুলো ঈমান বাড়ায়। আখিরাতে বিশ্বাস।


সূরা আল-আন'আম কুরআনের একটি গভীর অর্থবহ সূরা, যা আমাদেরকে তাওহীদ, নবীদের সংগ্রাম, শিরকের বিপদ এবং আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কে সচেতন করে। এর আয়াতগুলো অধ্যয়ন ও আমল করলে ঈমান দৃঢ় হয় এবং সঠিক পথের সন্ধান মেলে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ