আল্লাহর উপর ভরসা বা তাওয়াক্কুল হলো ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন,"যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে, তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।"(সূরা তালাক: ৩)। তাওয়াক্কুল শুধু মুখে বলার বিষয় নয়, বরং এটা অন্তরের বিশ্বাস ও কর্মের সমন্বয়।
আরও পড়ুন : সকাল বেলা সহবাস করলে যে উপকার
আল্লাহর উপর ভরসা করতে হলে প্রথমে তাঁর প্রতি দৃঢ় ঈমান আনতে হবে। আল্লাহর ক্ষমতা, জ্ঞান ও রহমতের উপর পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। নবী ইবরাহিম (আ.) যখন আগুনে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন, তখন তিনি আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রেখেছিলেন এবং আল্লাহ তাকে রক্ষা করেছিলেন।
দোয়া ও ইস্তিগফার বৃদ্ধি নিয়মিত করা। দোয়া হলো তাওয়াক্কুলের একটি বড় মাধ্যম। নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, দোয়া হল ইবাদতের মূল (তিরমিযী)।নিয়মিত দোয়া ও ইস্তিগফারের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে হবে।
অনেক মানুষ রিজিকের চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়ে। কিন্তু আল্লাহ বলেছেন, "আকাশ ও পৃথিবীতে এমন কোনো প্রাণী নেই, যার রিজিকের দায়িত্ব আল্লাহ গ্রহণ করেননি।"(সূরা হুদ: ৬) অতএব, হালাল উপায়ে চেষ্টা করার পর রিজিকের জন্য আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে।
আরও পড়ুন : যে ব্যাক্তি জালিমের পক্ষে থাকে
ছোট-বড় সব কাজে আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে হবে। নবী মুসা (আ.) যখন ফেরাউনের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন তিনি আল্লাহর উপর ভরসা করেছিলেন এবং আল্লাহ তাকে বিজয় দান করেছিলেন।
আরও পড়ুন : বরগুনা শাশুড়ী বউকে হত্যা
ধৈর্য্য হলো তাওয়াক্কুলের একটি বড় অংশ। আল্লাহ বলেন, "নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে আছেন।" (সূরা বাকারা: ১৫৩) যে কোনো বিপদে ধৈর্য্য ধরে আল্লাহর উপর ভরসা রাখলে তিনি অবশ্যই উত্তম সমাধান দেবেন।
আল্লাহর উপর ভরসা করতে হলে তাঁর দেওয়া বিধান মেনে চলতে হবে। কুরআন ও সুন্নাহর পথে চললে আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী হয়। যারা নিজের ক্ষমতায় অহংকার করে, তারা আল্লাহর উপর ভরসা করতে পারে না। বরং নম্রতা ও আল্লাহর দিকে ফিরে আসাই তাওয়াক্কুলের পথ।
সৎ কাজ করলে আল্লাহর সাহায্য বাড়ে। আল্লাহ বলেন, যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ ও উত্তম স্থান। (সূরা রাদ: ২৯) তাওয়াক্কুল মানে শুধু হাত গুটিয়ে বসে থাকা নয়, বরং যথাসাধ্য চেষ্টা করার পর ফলাফলের জন্য আল্লাহর উপর ভরসা করা।
আল্লাহ যা দেন বা না দেন, তাতে সন্তুষ্ট থাকা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। নবী আইয়ুব (আ.) কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েও ধৈর্য্য ধারণ করেছিলেন এবং আল্লাহ তাকে সুস্থতা দান করেছিলেন।
আল্লাহর উপর ভরসা রাখা মানে জীবনের সব চিন্তা ও দুশ্চিন্তা তাঁর হাতে সোপর্দ করে দেওয়া। উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে একজন মুমিন প্রকৃত তাওয়াক্কুল অর্জন করতে পারে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর উপর পূর্ণ ভরসা রাখার তাওফিক দান করুন।
0 মন্তব্যসমূহ