Comment

রাসূল (সাঃ) এর সকালের আমল ও দোয়া

সকালের সময়টি ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রতিদিন সকালবেলা বিশেষ কিছু আমল করতেন, যা উনার দিনের শুরুকে বরকতময় করে তুলত। এই আমলগুলো মুমিনের জন্য আদর্শ ও অনুসরণীয়। মানব মোসলমানদের জীবন সুন্দর করার জন্য এই আমল।


ভোররাতে তাহাজ্জুদ ও ইস্তিগফার। রাসূল (সা.) নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন এবং ভোররাতে ইস্তিগফার করতেন। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন,তারা রাতের অল্প অংশই নিদ্রায় কাটায় এবং ভোররাতে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে।(সুরা আদ-দারিয়াত, ৫১:১৭-১৮)


আরও পড়ুন : সূরা আল আন আমের ফজিলত


আল্লাহ তায়ালা প্রতি রাতেই শেষ তৃতীয়াংশে পৃথিবীর নিকটতম আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, 'কে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব! কে আমার কাছে কিছু চাইবে, আমি তাকে দান করব! কে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করব।(বুখারি, মুসলিম)


রাসূল (সা.) ফজরের নামাজ গুরুত্বের সাথে আদায় করতেন এবং এটিকে জামাতের সাথে পড়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। তিনি বলতেন, ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে, তার চেয়ে উত্তম। (মুসলিম) 


আরও পড়ুন : নবীজি কে অপমান করা যুবক


এছাড়াও তিনি বলেছেন,যে ব্যক্তি জামাতের সাথে ইশার নামাজ আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত জাগরণ করল। আর যে ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করল, সে যেন পুরো রাত জাগরণ করল। (মুসলিম)


রাসূল (সা.) সকালবেলা নিয়মিত জিকির-আজকার করতেন। তাঁর প্রিয় দোয়াগুলোর মধ্যে ছিল,আল্লাহুম্মা বিকা আসবাহনা, ওয়া বিকা আমসাইনা, ওয়া বিকা নাহইয়া, ওয়া বিকা নামুতু, ওয়া ইলাইকান নুশুর। অর্থ: হে আল্লাহ আমরা তোমার সাহায্যে সকাল করলাম, তোমার সাহায্যে সন্ধ্যা করলাম, তোমার সাহায্যে বাঁচি ও মরি এবং তোমার কাছেই পুনরুত্থান হবে।


আরও পড়ুন : জালিমের পক্ষে নিলে কি শাস্তি হবে


তিনি প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস তিনবার পড়ে ফুঁক দিতেন, যা তাঁকে সকল অনিষ্ট থেকে রক্ষা করত। (বুখারি)


রাসূল (সা.) সকালে এই দোয়া পড়তেন,আসবাহনা ওয়া আসবাহাল মুলকু লিল্লাহ, ওয়াল হামদু লিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু

অর্থ: আমরা সকাল করলাম এবং সব রাজত্ব আল্লাহর জন্য, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই


এই দোয়া পড়লে সকালের বরকত বৃদ্ধি পায়। রাসূল (সা.) সকালবেলা ইলম (জ্ঞান) চর্চা করতেন এবং সাহাবাদেরকে জ্ঞান অর্জনের তাগিদ দিতেন। তিনি বলতেন,যে ব্যক্তি জ্ঞানের পথে চলবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেবেন।


রাসূল (সা.) সকালে উম্মতের জন্য দোয়া করতেন এবং সদকা দেওয়ার অভ্যাস করতেন। তিনি বলতেন। প্রতিদিন সকালে মানুষের উপর সদকা করা আবশ্যক। এমনকি কাউকে সালাম দেওয়া, ভালো কথা বলা বা কষ্ট দূর করাও সদকা হিসেবে গণ্য হয়।


রাসূল (সা.)-এর সকালের আমলগুলো ছিল ইবাদত, জিকির, জ্ঞানচর্চা ও স্বাস্থ্য সচেতনতার সমন্বয়। এই আমলগুলো অনুসরণ করে আমরা আমাদের দিনের শুরু করতে পারি আল্লাহর রহমত ও বরকতের মধ্যে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রাসূল (সা.)-এর সুন্নত অনুযায়ী জীবনযাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ