
দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে, যার মধ্যে আসরের নামাজ একটি। এই নামাজের বিশেষ ফজিলত ও উপকারিতা রয়েছে, যা অনেক মুসলিমই হয়তো জানেন না। আসরের নামাজ ফজর, জোহর, মাগরিব ও ইশার নামাজের মতোই ফরজ, তবে কুরআন ও হাদিসে এ নামাজের বিশেষ গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন,"নামাজকে হিফাজত করো, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজ (আসর)। আর আল্লাহর জন্য বিনীতভাবে দাঁড়িয়ে যাও।" (সূরা বাকারা: ২৩৮) এই আয়াতে "মধ্যবর্তী নামাজ" বলতে আসরের নামাজকে বোঝানো হয়েছে, যা এর বিশেষ মর্যাদা প্রমাণ করে।
আসরের নামাজের ফজিলত,
১. জান্নাত লাভের অন্যতম উপায় আসরের নামাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,"যে ব্যক্তি আসরের নামাজ আদায় করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"(বুখারী: ৫৫৪) এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, আসরের নামাজ শুধু ফরজই নয়, বরং এটি জান্নাত লাভের একটি মাধ্যম।
ফেরেশতারা পালাক্রমে তোমাদের সাথে থাকেন, রাতের ফেরেশতা ও দিনের ফেরেশতা। তারা ফজর ও আসরের নামাজে একত্রিত হন। অতঃপর যারা তোমাদের মধ্যে রাত কাটিয়েছে তারা উপরে চলে যান। আল্লাহ তাদের জিজ্ঞাসা করেন, 'তোমরা আমার বান্দাদেরকে কী অবস্থায় রেখে এসেছ?' তারা বলেন, 'আমরা যখন তাদের রেখে আসি, তখন তারা নামাজ পড়ছিল এবং যখন আমরা তাদের কাছে গিয়েছিলাম, তখনও তারা নামাজ পড়ছিল।" (বুখারী: ৫৫৫)
আসরের নামাজ আদায়কারী ব্যক্তির আমলনামায় এটি সাক্ষ্য দেবে। রাসুল (সা.) বলেছেন,"কিয়ামতের দিন বান্দাকে প্রথম যে আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, তা হলো নামাজ। যদি নামাজ ঠিক থাকে, তবে সে সফল হবে। আর যদি নামাজ নষ্ট হয়, তবে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।"(তিরমিজি: ৪১৩)
আসরের নামাজ আদায়কারীকে শয়তান ধোঁকা দিতে পারে না। আসরের নামাজের এতটাই যে যখন কেউ এউ নামাজ আদায় করে শয়তান তার থেকে দূরে থাকে । রাসুল (সা.) বলেছেন,"যে ব্যক্তি আসরের নামাজ আদায় করে, শয়তান তাকে ধ্বংস করতে পারে না।"(মুসলিম: ৬২৭)
আসরের নামাজের উপকারিতা
নামাজ হলো আল্লাহর সাথে বান্দার যোগাযোগের মাধ্যম। আসরের নামাজ আদায়ের মাধ্যমে একজন মুমিন তার দিনের ব্যস্ততার মাঝে আল্লাহর স্মরণে সময় ব্যয় করে, যা তাকে আত্মিক প্রশান্তি দেয়। নামাজের রুকু-সিজদা শরীরের জন্য একটি উত্তম ব্যায়াম। বিশেষ করে আসরের নামাজের সময় দাঁড়ানো, রুকু করা ও সিজদা করা শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং পেশীকে সক্রিয় রাখে। নামাজে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও ধ্যান মনকে শান্ত করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নামাজ আদায়কারীদের মানসিক চাপ কম থাকে।
আসরের নামাজ শুধু একটি ফরজ ইবাদতই নয়, বরং এটি মুমিনের জীবনে আধ্যাত্মিক, শারীরিক ও সামাজিক সুবিধা বয়ে আনে। এই নামাজের ফজিলত অপরিসীম এবং এটি ত্যাগ করার পরিণতি ভয়াবহ। তাই প্রত্যেক মুসলিমের উচিত যথাসময়ে আসরের নামাজ আদায় করা এবং এর ফজিলত অর্জনের চেষ্টা করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আসরের নামাজ নিয়মিত আদায় করার তাওফিক দান করুন।
0 মন্তব্যসমূহ