
মেধাশক্তি এবং স্মরণশক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ। পড়ালেখা, কাজ বা ব্যক্তিগত জীবন—সব ক্ষেত্রেই শার্প মাইন্ড ও ভালো স্মৃতিশক্তি প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমান জীবনযাত্রা, স্ট্রেস, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। তবে কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি আপনার মেধা ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারেন।
আরও পড়ুন : নারীদের চুল পড়ার কারণ
মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য সঠিক পুষ্টি অপরিহার্য। কিছু খাবার মস্তিষ্কের কোষের গঠন ও কার্যক্রম উন্নত করে। যেমন - ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: স্যামন, ম্যাকারেল, আখরোট এবং ফ্ল্যাক্সসিডে প্রচুর ওমেগা-৩ থাকে, যা মস্তিষ্কের কোষের গঠন উন্নত করে। বেরি জাতীয় ফলে, ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি এবং ব্ল্যাকবেরিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা মস্তিষ্কের কোষ ক্ষয় রোধ করে। ডার্ক চকলেট,কোকোয়া ফ্লেভোনয়েডস সমৃদ্ধ, যা মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। হলুদ,কার্কুমিন নামক যৌগ মস্তিষ্কের প্রদাহ কমায় এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। ডিমে কোলিন নামক উপাদান নিউরোট্রান্সমিটার উৎপাদনে সাহায্য করে, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
আরও পড়ুন : জামাত ক্ষমতায় আসতে পারবে না,বিএনপি
ঘুম মস্তিষ্কের জন্য একটি রিসেট বাটনের মতো কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে,৭-৯ ঘণ্টা গভীর ঘুম স্মৃতি সংরক্ষণ এবং শেখার ক্ষমতা বাড়ায়। রাতের ঘুমের সময় মস্তিষ্ক অপ্রয়োজনীয় তথ্য মুছে দেয় এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ করে।
আরও পড়ুন : আসরের নামাজের ফজিলত ও উপকার
নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম শুধু শরীরের জন্যই নয়, মস্তিষ্কের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কে BDNF প্রোটিনের মাত্রা বাড়ে, যা নিউরনের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এ্যারোবিক এক্সারসাইজ হাঁটা, সাইক্লিং, সাঁতার) মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়।
দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস কর্টিসল হরমোন নিঃসরণ বাড়ায়, যা মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস (স্মৃতির কেন্দ্র) ক্ষতিগ্রস্ত করে। স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে মেধাশক্তি বাড়ানো যায়। মস্তিষ্কও একটি পেশির মতো, যত বেশি ব্যবহার করবেন তত শক্তিশালী হবে। কিছু মেন্টাল এক্সারসাইজ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
আরও পড়ুন : লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন
মস্তিষ্কের ৭৫% অংশই পানি দ্বারা গঠিত। ডিহাইড্রেশন হলে মস্তিষ্কের কার্যক্রম ধীর হয়ে যায়, মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি কমে যায়। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত সামাজিক মেলামেশা করেন তাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বেশি থাকে। বন্ধু ও পরিবারের সাথে সময় কাটানো মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে।
ধূমপান ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস করে এবং স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়। এগুলো এড়িয়ে চলুন। মেধাশক্তি ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং মস্তিষ্কের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়ে তুলতে পারেন। ছোট ছোট অভ্যাস পরিবর্তন করেই আপনি দীর্ঘমেয়াদী সুফল পাবেন।
0 মন্তব্যসমূহ