Comment

কেয়ামতের দিন কিভাবে বাঁচবো ও ক্ষমা?

ইসলামের ভাষ্যমতে প্রত্যেকটি মানুষ গুনাহগার। আর মানুষ গুনাহ করে এটা স্বাভাবিক। এই দুনিয়াতে প্রত্যেকটি মানুষ পাপ করেছে এবং বহু নবীও গুনাহ করেছে তবে আল্লাহ তায়ালা কোন কোন ভাবে তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। শুধুমাত্র নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন পাপ করেনি।

এখন আমরা প্রতি নিয়ত পাপ কারে থাকি। সবসময় পাপ করে চলেছি হয় পাঁচ ওয়াক্ত পড়ার পর আমরা পাপ করে থাকি

যেমন - কারো গিবত করা, গালি দেওয়া, ছেলে হলে মেয়ের দিকে,আর মেয়ে হলে ছেলের দিকে কুদৃষ্টি দিয়ে থাকি আরো অনেক। এখন তাহলে আমাদের বাঁচার উপায় কি আল্লাহ তায়ালা কাছে থেকে ক্ষমা পাওয়ার জন্য আমরা

এই দোয়া পড়তে পারি,

রব্বি ইন্নি জলামতু নাফসি ফাগফিরলি। অর্থ: হে আমার রব, নিশ্চয় আমি আমার নফ্সের প্রতি যুল্ম করেছি, সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।
(সুরা আল ক্বসাস ১৬)

বিভিন্ন আলেমরা বলেন গুনাহ করতে থাকি,আর আমরা যখন আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে আল্লাহ তায়ালা আমাদের ক্ষমা করে দেন, এই সম্পর্কে আরো ভালোভাবে বলতে গেলে। 

রাসুলুল্লাহ সাঃ যখন মেরাজের রাতে আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে দেখা করেন, তখন আল্লাহ ওয়াদা করেছে, হে নবী আপনার উম্মতের কেউ যদি শুধু শিরক ছাড়া আমার কাছে ক্ষমা চায় তাহলে আমি তাদের ক্ষমা করে দিবো।

বড় বড় আলেম যেমন মিজানুর রহমান আজহারী বলেন সবসময় আমরা যেন আল্লাহ তায়ালার কাছে এই দোয়া করি, হে আল্লাহ কেয়ামতের দিন আপনি আমাদের হিসাব নিয়েন না। কেননা প্রত্যেক মুসলিম কোন না কোন ভাবে গুনাহ করে, আর কেয়ামতের দিন যদি আল্লাহ তায়ালা আমাদের হিসাব নেয় তাহলে আমাদের বাঁচার উপায় নেই।

আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রতি নিয়ত ক্ষমা চাওয়ার একটা মাধ্যম হচ্ছে সবসময় ইস্তেগফার পাঠ করা। যেহেতু আমরা প্রতি নিয়ত পাপ করি,

তাই আমাদের সমসময় উঠতে বসতে হাঁটতে চলতে,সবসময় আমাদের ইস্তেগফার পাঠ করা উচিত। একটা হাদিসে এসেছে রাসুলুল্লাহ সাঃ সবসময় ৭০ বারের অধিক তওবা ইস্তেগফার পাঠ করতেন।

তবে সকাল সন্ধা আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা অর্থাৎ (ইস্তেগফার) চাওয়া উওম। অপর এক হাদিসে এসেছে কেউ ফজরের নামাজের পর সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করে; তাহলে সন্ধা হওয়ার আগ পর্যন্ত যদি সে মারা যায় তাহলে জান্নাতি;

অনুরূপ ভাবে কেউ যদি মাগরিবের নামাজের ফরজের পর সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করে এবং সকাল হওয়ার আগ পর্যন্ত সে যদি মারা যায় ; তাহলে সে জান্নাতি।

এছাড়া আমরা আল্লাহ তায়ালা কাছে এই দোয়া করতে পারি। "আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি"। হে আল্লাহ আপনি ক্ষমাশীল ;আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন,আমাকে ক্ষমা করে দিন। এই দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে অবশ্যই আপনাকে ক্ষমা করবেন।

মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন গাফুরুর রহিম তিনি ক্ষমা শীল তিনি ক্ষমা করতে পছন্দ করে;এবং তিনি আমাদের ক্ষমা করবেন ; তার ক্ষমা কোন তুলনা হয় না ;মহান রব্বুল আলামীন বলেন;

আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, সম্পদহানি, প্রাণহানি ও ফসলের ক্ষতির মাধ্যমে; তুমি সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের। যাদের বিপদ আপদ কিংবা সমস্যা হলে বলে "ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন"

  • আল্লাহ তায়ালা পবিএ কোরআনে বলে; নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহ ও আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাব। তাদের প্রতি তাদের রবের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও রহমত এবং তারাই হেদায়াতপ্রাপ্ত
  • (সুরা- বাকারা, আয়াত: ১৫৫-১৫৭)

আল্লাহ তায়ালা আমাদের তার বান্দাকে কখনো একা ছেড়ে দেয় না তিনি আমাদের ক্ষমা করা জন্য প্রতিটি মুহুর্তে প্রস্তুত থাকেন। আমরা যখনই তার কাছে ক্ষমা চাইবো তিন ক্ষমা করবেন

  • পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন ;আপনি তাদের মাঝে থাকা অবস্থায় আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন না এবং তারা ক্ষমা প্রার্থনা করল তখন আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন না
  • (সুরা-৮ আনফাল, আয়াত: ৩৩)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন;তোমরা জেনে রেখো,,তিনি পরাক্রমশালী পরম ক্ষমাশীল (সুরা-৩৯ জুমার, আয়াত: ৫)

আল্লাহ তায়ালা নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলেন ;হে নবী, আপনি আমার বান্দাদের বলে দিন আমি অবশ্যই ক্ষমাশীল পরম দয়ালু (সুরা-১৫ হিজর, আয়াত: ৪৯) ;মহান আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বান্দাদের ক্ষমা করতে থাকেন যতখন বান্দা ক্ষমা চাইতে থাকে।

নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ; যদি কেউ গুনাহ মাফের উদ্দেশ্যে ইস্তেগফার করাকে নিজের ওপর আবশ্যক করে নেয়, তাহলে আল্লাহ তাআলা তাকে তিনটি পুরস্কার দেবেন,,তার জীবনের কঠিন অবস্থা থেকে তাকে উদ্ধার করবেন, তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবেন, তাকে অচিন্তনীয় ও অকল্পনীয় স্থান থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।

প্রিয় বন্ধু আমরা নিজেকে সবসময় আল্লাহ তায়ালার ইবাদতে বন্দেগী থাকবো; সাধারণত নামাজ পড়ে থাকলেই হবে আমাদের সবসময় আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

কারণ আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা ও রহমত ব্যাতিত আমরা আনরা কিছুই নয়। আর কেয়ামতের মাঠে যদি আমাদের হিসাব নেওয়া হয় তাহলে আমাদের বাঁচার উপায় নেই ;অতএব আমরা সবসময় আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাইবো এবং ইস্তেগফার পাঠ করবো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ